নালিতাবাড়ী

রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞায় টলেনি যার দেশপ্রেম— তিনিই শেখ হাসিনা “

  স্বাধীন বাংলা নিউজ ১৭ মে ২০২৩ , ৬:৫০ পিএম অনলাইন সংস্করণ

রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞায় টলেনি যার দেশপ্রেম— তিনিই শেখ হাসিনা “



রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞায় টলেনি যার দেশপ্রেম— তিনিই শেখ হাসিনা ”                                                 
সরকার গোলাম ফারুক 
সাবেক সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ও
সদস্য, বাংলাদেশ আওয়ামিলীগ, 
নালিতাবাড়ী উপজেলা শাখা।
আজ ১৭ মে বাংলাদেশের প্রাচীনতম দল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার ঐতিহাসিক স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যার পর দীর্ঘ ৬ বছরের নির্বাসন শেষে আজকের এইদিনে তিনি বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। এদিন বিকেল সাড়ে ৪টায় ইন্ডিয়ান একটি বোয়িং বিমানে তিনি ভারতের রাজধানী দিল্লী থেকে কলকাতা হয়ে তৎকালীন ঢাকা কুর্মিটোলা বিমানবন্দরে এসে পৌঁছান।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ মদদে ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাকান্ডের মধ্যদিয়ে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়। এসময় বিদেশে থাকায় আল্লাহর অশেষ রহমতে বেঁচে যান বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশে মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ভূলুণ্ঠিত করে বাঙালি জাতির অস্তিত্বকে বিপন্ন করতে নানামুখী ষড়যন্ত্র শুরু করে ঘাতক গোষ্ঠী।
১৯৮১ সালের ১৪,১৫ ও ১৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকার ঐতিহাসিক হোটেল ইডেনে আওয়ামী লীগের কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাকে সর্বসম্মতিক্রমে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জনাব আব্দুর রাজ্জাককে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। এক বছরের মধ্যে জনাব আব্দুর রাজ্জাক সাহেব পদত্যাগ করলে সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীকে ১৯৮২ সনে ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব দেয়া হয়। এভাবেই জাতির পিতার জৈষ্ঠ্য কন্যার হাতে দেশের দ্বিতীয় মুক্তি সংগ্রামের নেতৃত্ব দেওয়ার পবিত্র দায়িত্ব অর্পণ করা হয়। বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বকে ভয় পায় ঘাতক গোষ্ঠী। খুনি সামরিক জান্তা জিয়াউর রহমান শেখ হাসিনাকে স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করতে না দেওয়ার জন্য সব ধরনের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেছিল।
সামরিক শাসকের রক্তচক্ষু ও নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে ১৯৮১ সালের ১৭ মে স্বদেশভূমিতে প্রত্যাবর্তন করেন শেখ হাসিনা। সেদিন রাজধানী ঢাকা মিছিলের নগরীতে পরিণত হয়। সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত ঢাকা শহর মিছিল আর স্লোগানে প্রকম্পিত হয়। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া থাকা সত্ত্বেও সেদিন লাখ লাখ মানুষের মিছিলকে ঝড়বৃষ্টি গতিরোধ করতে পারেনি। কুর্মিটোলা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও শেরেবাংলা নগর পরিণত হয় জনসমুদ্রে।
বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনাকে এক নজর দেখতে সেদিন সারা বাংলাদেশের মানুষের গন্তব্য ছিল রাজধানী ঢাকা। স্বাধীনতার অমর স্লোগান, ‘জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু’ ধ্বনিতে প্রকম্পিত হয়েছিল বাংলার আকাশ-বাতাস। জনতার কণ্ঠে আরেকটি স্লোগান ছিল ‘হাসিনা তোমায় কথা দিলাম পিতৃ হত্যার বদলা নেব’,’ঝড়-বৃষ্টি আঁধার রাতে আমরা আছি তোমার সাথে’। ‘শেখ হাসিনার আগমন, শুভেচ্ছা স্বাগতম’।
দেশে ফিরে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও স্বপ্ন বাস্তবায়নের দৃঢ় অঙ্গীকার, বঙ্গবন্ধু হত্যা ও জাতীয় চার নেতা হত্যার বিচার, স্বৈরতন্ত্রের চির অবসান ঘটিয়ে জনগণের হারানো গণতান্ত্রিক অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা, সার্বভৌম সংসদীয় পদ্ধতির শাসন ও সরকার প্রতিষ্ঠার শপথ নিয়ে আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করেন শেখ হাসিনা। 
শেখ হাসিনার দীর্ঘ ৪২ বছরের আন্দোলন-সংগ্রামের এ পথচলা কুসুমাস্তীর্ণ ছিলনা, ছিল কণ্ঠকাপূর্ণ ও বিপদসংকুল। গণমানুষের মুক্তির লক্ষে আন্দোলন সংগ্রাম করার অপরাধে তাকে বারবার ঘাতকদের হামলার শিকার ও কারা নির্যাতন ভোগ করতে হয়েছে কিন্তু তিনি বাংলার মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠা এবং নীতি ও আদর্শের প্রশ্নে ছিলেন পিতার মতোই অবিচল, দৃঢ় ও সাহসী। জনগণের ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে টানা তৃতীয় বারসহ চতুর্থ বারের মতো রাষ্ট্র পরিচালনার সুযোগ পেয়ে তিনি দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন এবং সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের কল্যাণে যুগান্তকারী অবদান রেখে চলেছেন।
জাতির পিতার ন্যায় শেখ হাসিনা যখনই রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব গ্রহণ করেছেন তখনই এদেশের মাটি ও মানুষের কল্যাণে বাস্তবায়ন করেছেন বহুমাত্রিক উদ্যোগ। বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের প্রতি অগাধ প্রেম এবং অক্ষয় ভালোবাসাই হলো শেখ হাসিনার রাজনৈতিক শক্তি।