শেরপুর

শেরপুরের বহুল আলোচিত ষাঁড় ‘ইউটিউবার’ কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ায় অবিক্রিত রয়ে গেল

  স্বাধীন বাংলা নিউজ ১২ জুলাই ২০২২ , ১২:৪০ পিএম অনলাইন সংস্করণ

শেরপুরের বহুল আলোচিত ষাঁড় ‘ইউটিউবার’ কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ায় অবিক্রিত রয়ে গেল



শেরপুরের বহুল আলোচিত ষাঁড় ‘ইউটিউবার’ কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ায় অবিক্রিত রয়ে গেল 
হাফিজুর রহমান লাভলু, শেরপুরঃ
শেরপুরে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে প্রস্তুত করা বহুল আলোচিত বিশালাকার ষাঁড় ‘ইউটিউবার’ অবশেষে অবিক্রিতই রয়ে গেল। কাঙ্ক্ষিত মূল্য না পাওয়ায় ৩২ মণ ওজনের এই ষাঁড়টি বিক্রি করেননি তরুণ উদ্যোক্তা সুমন মিয়া৷
শেরপুর পৌর শহর থেকে ৬ কিলোমিটার দূরে বাজিতখিলার কুমড়ী এলাকার দুলাল মিয়ার ছেলে সুমন মিয়া। পেশায় তিনি একজন তরুণ উদ্যোক্তা ও ইউটিউবার।
ইউটিউবার আকৃতি ও সৌন্দর্য নজর কেড়েছিল সবার। কেউ কেনার আশায় দেখতে এসেছিলেন। আবার অনেকে শুধু এত বড় ষাঁড়, সামনাসামনি দেখার জন্যই এসেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিক্রি হয়নি বিশালাকৃতির এই ষাঁড়টির।
হলস্টেল ফ্রিজিয়ান জাতের ৩২ মণ ওজনের ষাঁড়টিকে নিয়ে এখন কী করবেন, এ নিয়েই চিন্তায় সুমন ও তার পরিবার। তার ইচ্ছে ছিল খামার থেকেই বিক্রি করবেন ইউটিউবারকে। তাই ইউটিউবারকে কোনো হাটেই তোলেনি তিনি।
ইউটিউব থেকে আয় দিয়ে তার সংসারে এসেছে সচ্ছলতা, গড়ে তুলেছেন গরুর খামার। খামারে চারটি গরু আছে। এর মধ্যে দুটি ষাঁড়, একটি গাভি ও আরেকটি বাছুর।
সুমন মিয়া বলেন, ‘আমি ইউটিউবে কাজ করেই সবকিছু করেছি। ইউটিউবের রোজগার দিয়ে প্রথম কেনা গরুর নামও রেখেছি ইউটিউবার। আমি ইউটিউবারকে ঘরের বাইরে বের করি না।ঘরে রেখেই নিয়মিত খাবার ও গোসলসহ সব রকমের যত্ম নিই। প্রতিদিন কলা, আপেল, আঙ্গুরসহ চাল, ভুষি, ছোলা, খেসারি খাইয়েছি। তাছাড়া আমি ও আমার মা-বাবা অত্যন্ত আদর যত্ন করেছি। খামারেই চাহিদা ছিল অনেক, তাই এবার কোনো কোরবানির হাটে তুলিনি তাকে’।
তিনি আরও বলেন, ‘আমি তাকে এক বছর আগে এক লাখ ৯০ হাজার টাকা দিয়ে কিনেছি। এবার আমি ৭ লাখ টাকায় বিক্রি করতে চেয়েছিলাম। খামারে এসে ২০০ জনের মতো ক্রেতা এসে দাম করেছিল। সর্বোচ্চ দাম করেছিল চার লাখ ৭০ হাজার টাকা। শেষ পর্যন্ত যে ক্রেতা চার লাখ ৭০ হাজার টাকা কিন্তু সেই লোক অর্ধেক দাম নগদ দিতে চাইছিল আর অর্ধেক বাকি রাখতে চাইছিল। বাকি রাখতে চাইছিল বলে তাকে দিইনি। অনেকে তিন লাখ, কেউ তার কমও দাম করেছিল। আসলে এত কম দামে তাকে দেয়া যায়নি। আমার তাকে লালন-পালন করতেই খরচ হয়েছে প্রায় পাঁচ লাখ টাকার মতো’।
সুমনের বাবা দুলাল মিয়া বলেন, ‘আমরা আরও কিছুদিন দেখতে চাই। কিন্তু তাকে বিক্রি করার খুব দরকার ছিল। তার যে খরচ তা বহন করা খুব কঠিন হয়ে পড়ছে দিন দিন। এই ষাঁড়টাকে প্রতিদিন ৫০০ টাকার খাবার দিতে হয়। তিন থেকে চারবার গোসল করাতে হয়,গোয়ালে তিনটা ফ্যান আছে যেন গরম না লাগে’।
সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. পলাশ ক্রান্তি বলেন, আমি সুমনের বাড়িতে গিয়ে নিয়মিত তার শখের গরুটিকে চিকিৎসাসেবা দিয়ে আসছি। আমরা নানাভাবে পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছি। ঈদে বিক্রি না হলেও যেহেতু ষাঁড়টি সুস্থ সবল আছে, তাই যে কোন মূহুর্তে বিক্রি হয়ে যাবে৷
জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মোস্তাফিজুর রহমান জানান, এ বছর জেলায় কোরবানির গরুর উৎপাদন ৮৩ হাজার ৪শ ১৭টি, বিপরীতে চাহিদা ছিলো ৫৫ হাজার ৪শ ৬৫টি। এছাড়া জেলার পাঁচটি উপজেলায় মোট ২৭টি কোরবানির হাট ও ৬টি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম ছিলো। জেলা প্রাণিসম্পদ অফিসের উদ্যোগে পুরো জেলায় ২৩টি ভেটেনারি মেডিক্যাল টিম কাজ করেছে।