শেরপুর

শেরপুরে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস পালিত

  স্বাধীন বাংলা নিউজ ২৬ এপ্রিল ২০২৩ , ২:৫৫ পিএম অনলাইন সংস্করণ

শেরপুরে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস পালিত



শেরপুরে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস উপলক্ষে র‌্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত
সুরক্ষিত শ্রবণ, সুরক্ষিত জীবন’- এ স্লোগানকে সামনে রেখে শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে সমন্বিত ও অংশীদারিত্বমূলক প্রকল্পের আওতায় শেরপুরে পালিত হয়েছে আন্তর্জাতিক শব্দ সচেতনতা দিবস-২০২৩। 
দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে ২৬ এপ্রিল বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বর থেকে এক বর্ণাঢ্য র‌্যালি বের হয়ে জেলা শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পুনরায় সেখানে গিয়ে শেষ হয়। পরে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের তুলশীমালা কম্পিউটার ল্যাব কাম ট্রেনিং সেন্টারে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। 
পরিবেশ অধিদপ্তর শেরপুর জেলা কার্যালয়ের সহকারি পরিচালক মোহাম্মদ আল-মাহমুদের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মুকতাদিরুল আহমেদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সিভিল সার্জন ডাঃ অনুপম ভট্টাচার্য্য, শেরপুর ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতাল পরিচালক ডাঃ জসিম উদ্দিন। 
এসময় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শেরপুর জেলা বিআরটিএ সার্কেলের সহকারী পরিচালক (ইঞ্জিঃ) মো. আনোয়ারুল কিবরিয়া, শেরপুর বন অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুর রাজ্জাক প্রমুখ। এর আগে পরিবেশ অধিদপ্তরের শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণে বিভিন্ন এনফোর্সমেন্ট কার্যক্রম উপস্থাপন করেন শেরপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিদর্শক সুশীল কুমার দাস।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, শব্দ দূষণ এক ধরনের মারাত্মক পরিবেশ দূষণ। আমাদের সঠিক ধারণার অভাবে এই দূষণের মাত্রা দিন দিন বাড়ছে। 
শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ বিধিমালা (২০০৬) অনুসারে, দিন ও রাত ভেদে পাঁচটি অঞ্চলে শব্দের মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে যেমন- নিরিবিলি এলাকা, আবাসিক এলাকা, বাণিজ্যিক এলাকা, শিল্প এলাকা এবং মিশ্র এলাকা। শব্দ দূষণ শ্রবণশক্তি হ্রাসের পাশাপাশি মানুষের স্বাস্থ্য এবং আচরণ উভয় ক্ষেত্রেই সমস্যা সৃষ্টি করে। অপ্রয়োজনীয় এবং অতিরিক্ত শব্দ একজন ব্যক্তির স্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক কার্যকলাপকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে। শব্দ দূষণ উদ্বেগ, বিরক্তি, উচ্চ রক্তচাপ, শ্রবণশক্তি হ্রাস, ঘুমের ব্যাঘাত এবং অন্যান্য ক্ষতিকারক ও বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। এছাড়াও, অন্যান্য শারীরিক প্রতিক্রিয়া যেমন, স্মৃতিশক্তি হ্রাস, মানসিক অবসাদ ইত্যাদি হতে পারে। 
এছাড়াও বক্তারা আরো বলেন, শব্দ দূষণের বর্তমান মাত্রা খুবই উদ্বেগজনক। এটি একটি জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। কিন্তু আমাদের অসচেতনতার কারণে, আমরা প্রায়ই বলি যে এটি সমাধান করা সম্ভব নয়। কিন্তু এই সমস্যাগুলো মানবসৃষ্ট। একটু সচেতন হলেই এই সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। এজন্য আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ও মানুষের প্রতি সহনশীল হতে হবে। অযথা হর্ন বাজানোর দরকার নেই, হাইড্রোলিক হর্ন এড়িয়ে চলুন, সামাজিক অনুষ্ঠানে উচ্চস্বরে গান বা যন্ত্র বাজানো থেকে বিরত থাকুন। নির্মাণ কাজে শব্দের সীমা বজায় রাখুন। আমাদের আচরণগত পরিবর্তনও শব্দ দূষণ কমাতে পারে। শব্দদূষণ, শব্দদূষণের ক্ষতিকারক দিকসমূহ, শব্দদূষণ রোধে করণীয় সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করতে হবে। এজন্য পেশাজীবী গাড়িচালকসহ সবাইকে সম্মিলিতভাবে শব্দদূষণ রোধে সচেতনতা সৃষ্টি ও শব্দদূষণের কারণ মেনে চলতে হবে।
অনুষ্ঠানে শেরপুর জেলা কৃষি বিপণন কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন, শেরপুর যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সহকারি পরিচালক মো. মাহফুজুল হকসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা ও স্থানীয় সাংবাদিকগণ উপস্থিত ছিলেন।