ময়মনসিংহ

শেরপুরে হদি সম্প্রদায়ের উতুম পূজা পালিত

  স্বাধীন বাংলা নিউজ ২৪ জানুয়ারী ২০২৪ , ৬:১৪ পিএম অনলাইন সংস্করণ

শেরপুরে হদি সম্প্রদায়ের উতুম পূজা পালিত

মেহেদী হাসান শামীম,
শেরপুর প্রতিনিধি: শেরপুরে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী হদি সম্প্রদায়ের হারিয়ে যাওয়া উতুম পূজা অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৪ জানুয়ারি বুধবার দুপুরে শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এইচআরডি এর আয়োজনে জনপ্রতিনিধিদের কাছে আইপি জনগোষ্ঠীর প্রত্যাশা বিষয়ক সমাবেশ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ পূজা প্রদর্শন করা হয়।

এ সময় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা হরলাল বর্মন এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সদর উপজেলার চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম।

এছাড়া বিশেষ অতিথি ছিলেন সদর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা আরিফুর রহমান, মানবাধিকার কর্মী ও জন উদ্যোগ এর আহবায়ক আবুল কালাম আজাদ, আদিবাসী সমাজ উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক তাপস বিশ্বাস, আইইইডি এর আইপি ফলো সুমন্ত বর্মন, এইচআরডি এর আহবায়ক বিদ্যান বিশ্বাস।

আলোচনা সভার শেষে অধিক সম্প্রদায়ের বিলুপ্তপ্রায় উতুম পুজার প্রতীকি আয়োজন করা হয়। এ সময় হদি সম্প্রদায়ের নারীরা তাদের ঐতিহ্যবাহী কৃষ্টি-কালচারের, উলুধ্বনি, গীত এবং ভজন সংগীত পরিবেশন করেন।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত অতিথি ও আয়োজকরা জানায়, শেরপুরে গারো, কোচ, হাজং, হদি, বর্মন, ডালু ও বানাই সহ ৭টি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর জাতিসত্তার মানুষ বসবাস করেন। এদের মধ্যে বেশিরভাগ জাতির গোষ্ঠীর মানুষের ভাষাসহ কৃষ্টি-কালচার প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে। তাই তাদের কৃষ্টি-কালচার ধরে রাখতে বৈচিত্র্যময় জাতিসত্তার বসবাস এ বাংলাদেশকে বিশ্বের বুকে তুলে ধরতে বিভিন্ন ধর্মবর্ণ মানুষের পাশাপাশি ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী সম্প্রদায়ের কৃষ্টি-কালচার তুলে ধরে আগামী প্রজন্ম যেনো তাদের কৃষ্টি-কালচার ফিরে পায় এবং তা ধরে রাখে।

মূলত বৃষ্টি প্রার্থনার ব্রত উতুম পুজা। চৈত বৈশাখের খরার সময়ের ব্রত। উঠানে পিটুলি দিয়ে আঁকা লতা পাতার মাঝেই থাকে অশুভ নাশের ইঙ্গিত। শুভের আহ্বান। ব্রত মানে গেরস্থের বিপদ থেকে কিভাবে উদ্ধার পাওয়া যাবে তাঁর নানা আলাপ থাকে ব্রত কথায়। কথায় ও সুরে। পূজাটির চৈত্র মাসে হলেও আজ ২৪ জানুয়ারি বুধবার তারা শেরপুর শহরের শহীদ মিনার প্রাঙ্গনে এইচআরডির আয়োজনে আইপি জনগোষ্ঠীর প্রত্যাশা বিষয়ক অনুষ্ঠানে প্রতিকী হিসেবে এ পূজা অর্চনার আয়োজন করেন হদি সম্প্রদায়ের মানুষ। তাদের কৃষ্টি-কালচার হারিয়ে যেতে বসলেও তাদের আগামী প্রজন্মের কাছে তা তুলে ধরতে এর প্রতিকী পূজোর আয়োজন। সমাজের কাছে জানান দেন তারা এখনো টিকে আছে।

পূজা অর্চনার শুরুতে চারটি কলাগাছ পুঁতে তৈরি করা হয় পূজার আসন। আসনটি সাজানো হয় মুড়ি, খই, কলা, দই, চিড়া, গুড়সহ বিভিন্ন দ্রব্যাদ দিয়ে। এছাড়াও মাটির তিনটি টুকরো দিয়ে দিয়ে তৈরি করা হয় ‘উতুম’। সেই ‘উতুম’ এর গলায় দেওয়া হয় ফুলের মালা। এরপর হদি নারীরা উলুধ্বনি এবং পুরোহিতের মন্ত্রে শুরু করা হয় উতুম পূজার কাজ। পুরোহিত এসময় জগত সংসারের উন্নয়ন ও ভালোর জন্য সৃষ্টিকর্তার কাছে আশীর্বাদ চান।