নকলা

বজলুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে নকলা প্রেস ক্লাবে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত

  স্বাধীন বাংলা নিউজ ২৭ ফেব্রুয়ারী ২০২২ , ১২:৫৮ পিএম অনলাইন সংস্করণ

বজলুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে নকলা প্রেস ক্লাবে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত



বজলুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকীতে নকলা প্রেস ক্লাবে আলোচনা ও দোয়া অনুষ্ঠিত
নিজস্ব প্রতিনিধি: হাসান মিয়া (স্বাধীন বাংলা নিউজ ডেস্ক)
শেরপুরের নকলায় মহান মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম সংগঠক, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, সাহিত্যিক, কলামিষ্ট, দৈনিক সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক বজলুর রহমান-এঁর ১৪তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নকলা প্রেস ক্লাব বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে।
প্রেস ক্লাবের উদ্যোগে বাস্তবায়নকৃত বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে বজলুর রহমান-এঁর স্মরণে তাঁর কর্মকান্ডের ওপর স্মৃতিচারণ মূলক আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল ছিলো উল্লেখযোগ্য।
এ উপলক্ষ্যে গতকাল শনিবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) রাতে নকলা প্রেস ক্লাবের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. ফজলে রাব্বীরাজন ও মো. নূর হোসাইনের সার্বিক ব্যবস্থাপনায় প্রেস ক্লাবের অফিস কক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
প্রেস ক্লাব সভাপতি মো. মোশারফ হোসাইন-এর সভাপতিত্বে ও সিনিয়র সহ-সভাপতি খন্দকার জসিম উদ্দিন মিন্টুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন সরকার বাবু, যুগ্ম সম্পাদক নাসির উদ্দিন, সদস্য রাইসুল ইসলাম রিফাত, মোশাররফ হোসেন শ্যামল, নখলা ফ্রেন্ডস ক্লাবের চেয়ারম্যান এইচ.এম আরিফুল ইসলাম রাশেদ প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
বক্তারা দৈনিক সংবাদ পত্রিকার সম্পাদক মরহুম বজলুর রহমান-এঁর গনমাধ্যমসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডের উপর স্মৃতিচারণ মূলক বক্তব্য রাখেন। তারা জানান, বজলুর রহমান তৎকালীন ময়মনসিংহ জেলার ফুলপুর উপজেলার চরনিয়ামত গ্রামের আব্দুর রহমান মৌলভীর ঘর আলো করে ১৯৪১ সালের ৩ আগষ্ট জন্মগ্রহণ করেন এবং ২০০৮ সালের ২৬ ফেব্রুয়ারি দেশবাসীকে কাঁদিয়ে তিনি না ফেরার দেশে পারি জমান। তিনি বাংলার অগ্নি কন্যা হিসেবে খ্যাত সাবেক সফল কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী এমপি’র স্বামী ছিলেন। বক্তারা আরও জানান, বজলুর রহমান নকলা উপজেলার স্থানীয় এক প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ৫ম শ্রেণি পাশ করার পরে উপজেলার গণপদ্দি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে মেট্টিক পরীক্ষায় প্রথম বিভাগে উর্ত্তীণ হন। পরে ময়মনসিংহের আনন্দ মোহন কলেজে ও বরিশালের বজ্রমহন কলেজে পড়া লেখা করেন। তারপর তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সাংবাদিকতা বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন।
বজলুর রহমান সাংবাদিকতায় স্নাতক ডিগ্রী অর্জন করার পর ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। তিনি বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়নের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হল সভাপতি ছিলেন। ৫২ সালের ভাষা আন্দোলনের পর ৫৮ সালের শিক্ষা আইনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হন। অত:পর পর্য়ায়ক্রমে ৬২’র সংবিধান, ৬৬’র ৬দফা, ৬৯’র গণঅভ্যুথান, ৭০’র সাধারণ নির্বাচন, ৭১’র মুক্তিযুদ্ধ এসকল আন্দোলনে ও দিবস গুলিতে বিশেষ ভূমিকা রেখেছেন।
তাছাড়া প্রথিতযশা সাংবাদিক বজলুর রহমান দৈনিক সংবাদ পত্রিকার লেখনীর মাধ্যমে দেশ বিরোধীর বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। তিনি ছিলেন সংবাদের এক সাহসী কলম সৈনিক। বজলুর রহমান পরামর্শ মূলক লেখনীর মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধের পক্ষে আন্দোলনকে বেগবান করে তুলেন।
তিনি নরসিংদী জেলার ব্যারিস্টার আহমেদুল কবিরের সম্পাদিত দৈনিক সংবাদ পত্রিকায় দীর্ঘদিন ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক হিসেবে ছিলেন। পরে ৯৬ এর শেষ দিকে নিজে ওই পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে সুনামের সহিত প্রকাশ করে গেছেন।
রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংবাদিকতায় বিশেষ অবদান রাখা বজলুর রহমান ২০০৮ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি রাত সাতটার সময় পুরান ঢাকার ওয়ার্লেস গেইটে সাবেক কৃষি মন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরীর সরকারি বাসভবনে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজধানী ঢাকার কার্ডিয়াক হাসপাতালে বিশেষ কেবিনে চিকিৎসারত অবস্থায় ২৬ ফেব্রুয়ারিতে তাঁর মৃত্যু হয়। নকলা উপজেলার পাইলট হাইস্কুল মাঠে জানাযা নামাজ শেষে ঢাকায় আরও একটি জানাযা নামাজ অনুষ্ঠিত হয়। পরে রাজধানী ঢাকার শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়। এর পর থেকে প্রতি বছর শেরপুর, নকলা ও নালিতাবাড়ী উপজেলাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে বিভিন্ন কর্মসূচি পালনের মাধ্যমে তাঁর আত্মার মাগফেরাত কামনা করা হয়। এ বছরও এর ব্যাতিক্রম হয়নি।