নকলা

নকলায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন, এলাকাবাসীর মানব বন্ধন

  স্বাধীন বাংলা নিউজ ২৩ মার্চ ২০২২ , ৮:৪৬ পিএম অনলাইন সংস্করণ

নকলায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন, এলাকাবাসীর মানব বন্ধন



নকলায় প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন, এলাকাবাসীর মানব বন্ধন
নিজস্ব প্রতিনিধি: হাসান মিয়া (স্বাধীন বাংলা নিউজ ডেস্ক)
শেরপুরের নকলা উপজেলার উরফা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান রেজাউল হক হীরা ও তার সমর্থকসহ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের করা সংবাদ সম্মেলন ও খবর প্রকাশের বিরুদ্ধে পাল্টা সংবাদ সম্মেলন করেছেন ওই ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান নূরে আলম তালুকদার ভূট্টো। তাছাড়া এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ হয়ে মানব বন্ধন করেছেন স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (২২ মার্চ) উরফা ইউনিয়ন পরিষদ চত্বরে মানব বন্ধন ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের অফিস কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে লিখিত বক্তব্য উপস্থিত জনগন ও সাংবাদিকদের পাঠ করে শুনান ইউপি চেয়ারম্যান মুহাম্মদ নূরে আলম তালুকদার ভূট্টো। নূরে আলম তালুকদার ভূট্টো তার বক্তব্যে জানান, গত ১৩ ফেব্রুয়ারি উরফা ইউনিয়নের হাসনখিলা গ্রামের হুকুম আলীর ব্যাটারি চালিত ভ্যান চুরি করার অভিযোগে একই গ্রামের আব্দুল খালেক ও রুবেল মিয়াকে বিবাদী করে তার কার্যালয়ের গ্রাম্য আদালতে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন।
অভিযোগের প্রেক্ষিতে সমাধানের লক্ষে গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে দফায় দফায় নোটিশ করা হয়। রুবেল বার বার তা অবমাননা করায় ১৯ মার্চ স্থানীয় জনতা রুবেলকে ধরতে তার বাড়ি ঘেরাও করে রাখে। এই সংবাদ পেয়ে তিনি (ভূট্টো) সঙ্গিয় গ্রাম পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। পরে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হতে পারে মনেকরে নকলা থানায় খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে রুবেলকে পুলিশি হেফাজতে নেয়। এ ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নূরে আলম তালুকদার ভূট্টোকে সন্দেহ করে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্ধরা সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন ও চক্রান্তমূলক সংবাদ সম্মেলন করেন এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন মাধ্যমে খবর প্রকাশ করা হয়। এতে তাকে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে বলে নূরে আলম তালুকদার ভূট্টো মনে করছেন। তাই তিনি ওই সংবাদ সম্মেলন ও ভিত্তিহীন প্রকাশিত খবরের বিরুদ্ধে পাল্টা সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। তাছাড়া স্থানীয়রা ক্ষুব্ধ হয়ে মানব বন্ধন করেছেন।
রুবেল পুরো ঘটনা অস্বীকার করে জানান, ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী নূরে আলম তালুকদার ভূট্টো বিজয়ী হওয়ার পরদিন থেকেই তার নেতৃত্বে কিছু সন্ত্রাসী প্রকৃতির যুবক ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর অজ্ঞাত কারনে অত্যাচার, জুলুম, নির্যাচন ও বিভিন্ন ভাবে হয়রানি মূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাচ্ছে। এরমধ্যে, আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল মতিনের বাড়ি, জসিম উদ্দিনের বাড়ি, তাড়াকান্দা এলাকার রুস্তম আলীর বাড়ি, মোজাকান্দা এলাকার এমদাদুল হকের বাড়ি ভাংচুর করে লোটপাট করা হয়। প্রকাশ্যে চশমা প্রতীকে ভোট নাদিয়ে নৌকা প্রতীকে প্রচার ও ভোট দেওয়ার পুড়িয়ে দেওয়া হয় পিছলাকুড়ি এলাকার মুদির দোকানদার মাহবুবের দোকান, শালখা এলাকার ভ্যান চালক দরিদ্র খোকার মিয়ার একমাত্র আয়োর মাধ্যম ভ্যানটি ভেঙ্গে দেওয়া হয়। এছাড়া চশমা প্রতীকে ভোট না দিয়ে নৌকা প্রতীকে প্রচার ও ভোট দেওয়ায় ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের কাল্পনিক নোটিশ করে গ্রাম পুলিশ দিয়ে পরিষদে ডেকে এনে নির্যাতন ও ভয়ভীতি দেখানো হয়।
তাই ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ওপর অজ্ঞাত কারনে অত্যাচার, জুলুম, নির্যাচন ও বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করাসহ মধ্য রাতে এক অন্তসত্বা নারী ও আওয়ামী লীগ নেতার পরিবারের সদস্যদের শারীরিক নির্যাতন করার প্রতিবাদে নিন্দাজ্ঞাপন পূর্বক সংবাদ সম্মেলন করেছেন উপজেলা, ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ।
সংবাদ সম্মেলনে নূরে আলম তালুকদার ভূট্টোর বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ সম্বলিত লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উরফা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি নাজিম উদ্দিন। এছাড়া ওই চেয়ারম্যান ও তাঁর অনুসারী বেশ কিছু লোকের নাম উল্লেখপূর্বক বিভিন্ন অভিযোগ সম্বলিত মৌখিত বক্তব্য রাখেন উরফা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আক্তারুজ্জামান, ইউনিয়ন যুব লীগের সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ আহম্মেদ, ভুক্তভোগী আওয়ামী লীগ নেতা রুবেল ফরাজী ও জসিম উদ্দিনসহ স্থানীয় অনেকে।
নকলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুশফিকুর রহমান বলেন, উরফা ইউনিয়নে রুবেল নামের এক যুবককে স্থানীয়রা অবরোদ্ধ করে রাখার সংবাদ পেয়ে ঘটনাস্থল থেকে রুবেলকে পুলিশ উদ্ধার করে থানা হেফাজতে আনাহয়। রুবেলের বিরুদ্ধে কোন প্রকার চুরির অভিযোগ পাওয়া যায়নি, এমনকি পুলিশ তাকে চোর হিসেবে আটক বা গ্রেফতার করেনি। কেউ যদি রুবেলকে চুর হিসেবে আখ্যা দিয়ে থাকে এটা একান্ত তাদের নিজস্ব ব্যাপার। তবে চুর অপবাদসহ যেকোন মিথ্যা অপবাদের বিষয়ে চাইলে যেকেউ আইনের (আদালতের) আশ্রয় নিতে পারেন বলেও ওসি মুশফিকুর রহমান জানান।