শেরপুর

শেরপুরে বিধবার পরিবারকে উচ্ছেদ করতে ৫ টি মিথ্যা মামলার অভিযোগ

  স্বাধীন বাংলা নিউজ ৮ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ , ৬:২১ পিএম অনলাইন সংস্করণ

শেরপুরে বিধবার পরিবারকে উচ্ছেদ করতে ৫ টি মিথ্যা মামলার অভিযোগ



শেরপুরে বিধবার পরিবারকে উচ্ছেদ করতে ৫ টি মিথ্যা মামলার অভিযোগ 
শেরপুর প্রতিনিধি : 
শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলায় বিধবা মিনারা ও তার সন্তানদের স্বামীর বসতবাড়ী থেকে উচ্ছেদের পায়তারা চলছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তাকে বাড়ী ছাড়া করতে মিনারাসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে দেয়া হয়েছে মিথ্যা ৫টি মামলা। মিনারা বেগম উপজেলার মালিঝিকান্দা ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া গ্রামের মৃত জবান আলীর স্ত্রী। 
মামলার সুত্রে জানা গেছে, গত প্রায় ১১বৎসর আগে মিনারার স্বামী জবান আলী মারা যায়। স্বামী মৃত্যুের পর মিনারা তার ৩মেয়ে ১ ছেলেকে নিয়ে স্বামীর পৈত্রিক বসতবাড়ীতে বসবাস করে আসছিলো। মিনারার স্বামী মারা যাওয়ার পর নানা অযুহাতে একই গ্রামের হাবিবুল্লাহ ও আলামিন গংদের একটি সঙ্গবদ্ধ চক্র মিনারার বসতবাড়ীটি গ্রাস করার পরিকল্পনায় মেতে উঠে। বিষয়টিকে কেন্দ্র করে প্রথমে স্থানীয় ভাবে বৈঠক করা হয়। বিষয়টি সমাধান না হওয়ায় শেষে থানা পর্যন্ত গড়ায়। প্রতিপক্ষরা প্রভাবশালী হওয়ায় থানাতেও কোন নিষ্পত্তি হয়নি। পরবর্তীতে হাবিবুল্লাহ ও আলামিন গংরা মিনারার পরিবারকে উচ্ছেদ করতে পরিকল্পিত ভাবে গত ৩মার্চ ২০২২ তারিখের বিকেলে অর্তকিত হামলা চালায়। এতে মারাক্তক ভাবে মিনারা বেগম, মেয়ে নুরে জান্নাত, জিনিয়া, জেরিন, ছেলে রানা আহত হয়। তাদের হামলায় মিনারা বেগমের মাথা ক্ষত-বিক্ষত হয়। মেয়ে নুরে জান্নাতের ডান চোখ দায়ের কোপে মারাক্তক ভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হয়। মিনারা বেগম সহ তার সন্তানেরা প্রায ১ মাস শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকেন। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে মিনারার ছেলে রানা বাদী হয়ে ১২ ব্যক্তির নামে একই দিনে ঝিনাইগাতী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ আমলে নিয়ে থানা পুলিশ দীর্ঘ তদন্ত শেষে ১২ ব্যক্তিকে দোষী সাব্যস্ত করে পেনাল কোড ১৪৩/৪৪৭/৪৪৮/৩২৩/৩২৪/৩২৬/৩০৭/৩৫৪/৫০৬(২)/১১৪/৩৪ ধারায় গত ২৯মে ২০২২ তারিখে আদালতে চার্জশিট প্রদান করেন। এ মামলা থেকে বাঁচতে এবং বিধবা মিনারার পরিবারকে বসতবাড়ী থেকে উচ্ছেদ করতে মরিয়া হয়ে উঠে হাবিবুল্লাহ ও আলামিন গংরা। ফলশ্রুতিতে মিনারার ৩২৬ মামলাটি তুলে নিতে প্রথমে হুমকি প্রদান করে। এতে কাজ না হওয়ায় পরিকল্পিতভাবে হাবিবুল্লাহ ও আলামিন গংরা বাদী হয়ে মিনারার পরিবার ও তার আত্বীয় স্বজনদের নামে আদালতে পরপর চাঁদাবাজির ২টি, মারধরের ২টি এবং ৭ধারা আইন সহ মোট ৫টি মামলা দায়ের করেন। হাবিবুল্লাহ ও আলামিন গংরাদের দায়ের করা ৫টি মামলার মধ্যে ২টি মামলা থেকে মিনারা গংদের অব্যাহিত প্রদান করেন আদালত। মিনারার পরিবারের বিরুদ্ধে অপর ৩টি মামলা থানা আর আদালতে চলমান রয়েছে বলে জানা গেছে। 
বিধবা মিনারা বেগম জানান, ‘গত প্রায় ১১ বছর আগে আমার স্বামী মারা যান। ৪টি সন্তান নিয়ে নানান প্রতিকুল অবস্থার মধ্যে স্বামীর পৈত্রিক বসতবাড়ীতে বসবাস করে আসছি। হাবিবুল্লাহ ও আলামিন গংরা আমাকে ও আমার পরিবারকে হত্যার উদ্দেশে আক্রমণ করেও ক্ষান্ত হয়নি। উল্টো ৫টি মিথ্যা মামলা দিয়ে অসহায় বিধবা পরিবারটিকে হয়রানী করছে। তারা আমাকে তাদের বিরুদ্ধে দায়ের করা ৩২৬ মামলাটি তুলে নিতে প্রাণনাশের হুমকিও দিচ্ছে। যে কারণে আমি ও আমার পরিবারের জীবন রক্ষার্থে থানায় একটি সাধারণ ডাইরি করেও আতংকের মধ্যে দিনাতিপাত করছি। আমি একজন অসহায় বিধবা নারি হিসেবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাসহ সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে ন্যায় বিচারের আবেদন জানাচ্ছি’। 
এ ব্যাপারে হাবিবুল্লাহ ও আলামিন গংরাদের সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেও তাদের কোন মন্তব্য পাওয়া যায়নি।