শেরপুর

শেরপুরের প্রকৃতি সেজেছে শিমুলের রঙিন রূপে

  স্বাধীন বাংলা নিউজ ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৩ , ৭:৪৯ পিএম অনলাইন সংস্করণ

শেরপুরের প্রকৃতি সেজেছে শিমুলের রঙিন রূপে



শেরপুরের প্রকৃতি সেজেছে শিমুলের রঙিন রূপে
হাফিজুর রহমান লাভলু, শেরপুর:
শেরপুর জেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রকৃতি সেজেছে এক রঙ্গিন রূপে। গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে নয়নাভিরাম শিমুল ফুল। সব কিছুর মধ্যেও প্রকৃতিকে যেন সাজিয়েছে শিমুলে ফুলের শোভায় এক নতুন রূপে।
বাতাসে দোল খাচ্ছে শিমুল ফুলের রক্তিম আভায়। গাছের ডালে ফুটে থাকা শিমুল ফুল মানুষের মনকে যেন রাঙিয়ে তুলেছে। প্রকৃতির এমন অপরূপ সৌন্দর্য মনে করিয়ে দেয় ‘জীবনে বসন্ত এসেছে, ফুলে ফুলে ভরে গেছে মন, ওগো বান্ধবী অনামিকা, আজ তোমাকেই প্রয়োজন’ গানের লাইনটি।
জানা যায়, শিমুল গাছে বসন্তের শুরুতেই ফুল ফোটে। চৈত্র মাসের শেষের দিকে ফল পুষ্ট হয়। বৈশাখ মাসের দিকে ফলগুলো পেকে শুকিয়ে গিয়ে বাতাসে আপনা-আপনিই ফল ফেটে প্রাকৃতিকভাবে তুলার সঙ্গে উড়ে উড়ে দূর- দূরান্তে ছড়িয়ে পড়া বীজ থেকেই এর জন্ম হয়। প্রাকৃতিকভাবেই শিমুল গাছ বেড়ে উঠে। এছাড়া বালিশ, তোষক ও লেপ তৈরিতে শিমুল তুলার জুড়ি নেই। শিমুল গাছ কেবল সৌন্দর্যই বাড়ায় না এই গাছে রয়েছে নানা উপকারিতা এবং অর্থনৈতিকভাবেও বেশ গুরুত্ব বহন করছে এ গাছটি।
রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) সকালে সরেজমিনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, গাছে গাছে শোভা পাচ্ছে শিমুল ফুল। পাশাপাশি বসন্তের সঙ্গে- সঙ্গেই প্রকৃতি যেন নিজ রূপে সেজে উঠেছে। রাস্তার দুপাশে, পুকুরপাড়ে শিমুল গাছে ফুল বাতাশে দোলা খাওয়ার দৃশ্য দেখা যায়।
পথচারিরাসহ দর্শনার্থীদের মন কাড়ছে শিমুল ফুল । তাছাড়া গাছে গাছে আসতে শুরু করেছে নতুন পাতা, স্নিগ্ধ সবুজ কচি পাতার ধীর গতিময় বাতাস জানান দিচ্ছে নতুন লগ্নের। ফাল্ধসঢ়;গুনের আগমনে পলাশ, শিমুল গাছে লেগেছে আগুনে খেলা। লাল ফুলের কারণে পুরো এলাকায় সেজেছে রক্তিম আভায়।
তবে গাছের তলায় ঝরে পড়ার সেই চিরচেনা দৃশ্যে চোখ জুড়াতে অপেক্ষা করতে হবে আরও সপ্তাহখানেক। আলাদা কোনো গন্ধ নেই, তবুও পথচারীদের বিমোহিত করে শিমুল ফুল। আর সূর্যের খরতাপে সেদিকে তাকালে চোখে ভেসে ওঠে অনন্য সৌন্দর্য্য। আজ থেকে এক দশক আগেও গ্রামাঞ্চলের বিভিন্ন জায়গায় গাছে গাছে শোভা বর্ধন করতো শিমূল ফুল।
তবে কালের বিবর্তনে ঋতুরাজ বসন্তে এখন আর যেখানে-সেখানে চোখে পড়ে না রক্তলাল শিমূল গাছ। মূল্যবান এ গাছটি এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। পরিবেশবাদী সংগঠন সবুজ আন্দোলন শেরপুরের আহবায়ক মেরাজ উদ্দিন বলেন, প্রকৃতিকে অপরূপ নাজে ফুটিয়ে তুলে শিমুল ফুল। গ্রাম বাংলার এই শিমুল গাছ আগে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এনে দিত। মানুষরা এই শিমুলের তুলা কুড়িয়ে বিক্রি করতো। অনেকে নিজের গাছের তুলা দিয়ে বানাতো লেপ, তোষক ও বালিশ। শিমুলের তুলা বিক্রি করে অনেকে স্বাবলম্বী হয়েছে, এমন নজিরও আছে। কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় এখন আর তেমন চোখে পড়ে না শিমুল গাছের। এর সংরক্ষনে কৃষি বিভাগসহ পরিবেশবাদী সংগঠনকে এগিয়ে আসতে হবে।