নকলা

নকলায় কুরবানী ঈদ কে সামনে রেখে ব্যস্ত কামাররা

  স্বাধীন বাংলা নিউজ ২৬ জুন ২০২৩ , ১১:০৮ পিএম অনলাইন সংস্করণ

নকলায় কুরবানী ঈদ কে সামনে রেখে ব্যস্ত কামাররা



কুরবানী ঈদ কে সামনে রেখে ব্যস্ত কামাররা
নকলা উপজেলা প্রতিনিধি: হাসান মিয়া 
মুসলমান সম্প্রদায়ের দ্বিতীয় বৃহত্তম ধর্মীয় উৎসব ঈদ-উল-আযহা যা কোরবানির ঈদ নামেও পরিচিত। এবছরের ঈদ-উল-আযহা আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। আর এই ঈদকে সামনে রেখে কোরবানীর পশু জবাইয়ের অন্যতম উপকরণ চাকু, দা, ছুড়ি, বটি, চাপাতিসহ লোহার বিভিন্ন সামগ্রী তৈরীতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন জেলার নকলা উপজেলার কামার সম্প্রদায়।
দোকানের জ্বলন্ত আগুনের তাপে কামারদের কপাল থেকে ঝরছে ঘাম। চোখে মুখে ক্লান্তির ছাপ। তবুও থেমে নেই তারা। সকাল পেরিয়ে রাত পর্যন্ত চলছে হাতুড়ি পেটানোর কাজ। একদিকে আগুনের শিখা অন্যদিকে হাতুড়ি পেটানোর টুং টাং শব্দে তৈরি হচ্ছে বিভিন্ন সরঞ্জাম। আবার কেউ পুরনো দা, বটি, ছুরি নতুন করে ধার দেওয়ার জন্য ভীড় জমাচ্ছে কামারদের দোকানে। তবে বিগত সময়ের তুলনায় এসব সরঞ্জামাদীর দাম অনেকটাই বেশি।
জানা গেছে, ধান কাটার মৌসুমে কাঁচি এবং কোরবানী ঈদে চাকু, ছুড়ি, চাপাতি, বটির বেশি দরকার পড়ে। তখন এসব তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েন সব এলাকার কামার সম্প্রদায়। তাই কামারদের তৈরি বিভিন্ন সামগ্রীর কদর ক্রমেই বাড়ছে। বাপ-দাদার ঐতিহ্য ধরে রাখতে মূলত কিছু কামার এখনো এ পেশায় জড়িয়ে আছেন বলে অনেক কামাররা জানান। তারা বলেন, পরিশ্রমের তুলনায় এই পেশায় সাধারনত আয় ও সম্মান উভয়ই কম। তাই আমাদের অনেকেই এ পেশা ছেড়ে অন্য পেশায় জড়িয়ে পড়েছেন।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে কোরবানির ঈদকে সামনে রেখে কামাররা লোহা কিনে সেগুলোকে আগুনে পুড়ে দা, বটি, চাকু, চাপাতিসহ লোহার বিভিন্ন সরঞ্জাম তৈরি করছেন। তৈরিকৃত জিনিসপত্র দিয়ে নিজ নিজ দোকান সাজিয়ে রেখেছেন। প্রতিদিন বিপুল সংখ্যক ক্রেতা তাদের চাহিদা মোতাবেক কামারের দোকান থেকে জিনিস কিনছেন।
কামাররা এসব নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র মৌসুমি চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানের পাইকারীও বিক্রি করেন বলে জানা গেছে। অনেক ক্রেতা জানান, গত বছরের তুলনায় এবার লোহার দাম অনেক বেশি হওয়ায় লোহার তৈরি জিনিসের দামও বেড়েছে। বর্তমানে পশুর চামড়া ছাড়ানো ছুরি ১৫০ থেকে ৩শ টাকা, দা ২৫০ থেকে ৬শ টাকা, বটি ৩শ থেকে ৫শ টাকা, পশু জবাইয়ের ছুরি মান ও আকারভেদে ৩শ থেকে ১ হাজার টাকা, হাঁসুয়া ১৫০, মাংস কাটার ডাসা ২ হাজার টাকা, কাটারি ২৫০ থেকে ৩শ টাকা, কুড়াল ৮শ থেকে ১ হাজার টাকা ও চাপাতি ৫শ থেকে ১২শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অনেকে জানান, মেশিনে তৈরি আধুনিক যন্ত্রের প্রভাবে কামার শিল্পের দুর্দিন চললেও ঈদুল আযহার মৌসুমে তাদের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আলোর মুখ দেখে। তবে কামার শিল্পীরা আশংকা প্রকাশ করে বলেন, মেশিনের সাহায্যে আধুনিক যন্ত্রপাতি তৈরি হওয়ার ফলে অদূর ভবিষ্যতে হয়তবা এই পেশা বিলুপ্ত হয়ে যাবে।