দেশজুড়ে

বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাচনে জনপ্রিয়তার আলোচনাতে চেয়ারম্যান প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন আহমদ

  স্বাধীন বাংলা নিউজ ২৯ এপ্রিল ২০২৪ , ৪:০৭ পিএম অনলাইন সংস্করণ

বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাচনে জনপ্রিয়তার আলোচনাতে চেয়ারম্যান প্রার্থী গিয়াস উদ্দিন আহমদ

বিশ্বনাথ(সিলেট)প্রতিনিধি:

৮ই মে বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। প্রতীক বরাদ্দের পর মাঠে আছেন ১০ চেয়ারম্যান প্রার্থী, ৬ ভাইস চেয়ারম্যান ও ৩ মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মিলে মোট ১৯ জন প্রার্থী।

ইতিমধ্যে বিএনপির মনোনীত চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে যারা নির্বাচনে প্রার্থীতা করছেন তারা সবাই বিএনপির কেন্দ্রীয় আদেশে দল থেকে বহিস্কৃত হয়েছেন। বিএনপির জনপ্রিয় নেতা এম ইলিয়াস আলী নিখোঁজের পর এ অঞ্চলে তাঁর জনপ্রিয়তাকে ব্যবহার করে অনেকেই জনপ্রতিনিধি নির্বাচিত হয়েছেন। কিন্তু ৬ষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এসে সামগ্রিক চিত্র ভিন্ন পরিলক্ষিত হচ্ছে এমনটাই বলছে সরেজমিন পর্যবেক্ষণ। সদ্য বিএনপি থেকে বহিস্কৃত চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীরা দলের নির্দেশনা অমান্য করে ভোটের মাঠে কতটুকু সফলতা পাবেন এমন প্রশ্নই ঘুরপাক করছে জনমনে। এছাড়া একি পরিবারের ২ ভাই গৌছ খাঁন ও সেবুল মিয়া চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করায় ভোট ভাগাভাগি ও পরাজয়ের সম্ভাবনা রয়েছে এমনটি বলছেন বিএনপির সাথে সংশ্লিষ্ট অনেক নেতৃবৃন্দ। দল থেকে বহিস্কৃত সাবেক উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল আহমদ চৌধুরীর পক্ষে শীর্ষস্থানীয় কোন নেতা ভোটের মাঠে কাজ করছেন না। আগের চেয়ে বর্তমানে তাঁর জনপ্রিয়তা অনেকটাই তলানিতে এমন তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। বিএনপির ব্যানারে নির্বাচন করছেন অপর প্রার্থী যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিএনপি নেতা সফিক উদ্দিন। উট মার্কা নিয়ে এ প্রার্থীর প্রচারণা ও জনসমর্থন তেমন চোখে পড়ছেনা।

এছাড়া অতীত রের্কড বলছে এ উপজেলায় এখন পর্যন্ত প্রবাসী প্রার্থীরাই বারবার নির্বাচিত হয়েছেন। এবারের নির্বাচনে ও ১০ জন প্রার্থীর মধ্যে ৮ জনই প্রবাসী রয়েছেন। এঁরা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যের দৈত নাগরিক সুবিধা ভোগ করেন। তবে এ নিয়ে ভোটারদের মধ্যে অনেকটা সচেতনতা জাগ্রত হচ্ছে এখন। অনেক ভোটারই মনে করছেন প্রবাসীদের জিতিয়ে নাগরিক সেবা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন তাঁরা। সময়ে অসময়ে তারা প্রবাসে সময় কাটান, এতে করে উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা। এ ধারা থেকে পরিত্রাণ পেতে নতুন ও তরুণ শিক্ষিত নাগরিকদের একাধিক মতামত পাওয়া যাচ্ছে। হয়তো এবার তার প্রতিফলন বাস্তবায়িত হবে।

দেশীয় প্রার্থীদের মধ্যে মাত্র দুই জন চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে বিশ্বনাথের ভোটারদের দ্বারে দ্বারে প্রচার আর ভোটারদের মনতুষ্ঠিতে সময় পার করছেন। ইতিমধ্যে তাদের ভোটের মাঠ অনেকটা উত্তপ্ত। সিলেট জেলা পরিষদের সদ্য সাবেক সদস্য, বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামীলীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক, সিলেট জজ কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী সাবেক ছাত্র নেতা এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ (আনারস) ও বিশ্বনাথ পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহবায়ক আলতাব হোসেন (টেলিফোন) মার্কা নিয়ে নির্বাচনী মাঠ কাঁপাচ্ছেন। এ দুই প্রার্থীর মধ্যে সর্বাধিক দিক বিবেচনায় চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ এগিয়ে আছেন এমনটি বাস্তবতা বলছে।

গিয়াস উদ্দিন এগিয়ে থাকার কারণ হিসেবে রয়েছে তিনি বিগত জেলা পরিষদের নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সাবেক এমপি ইয়াহিয়া চৌধুরীর ছোট ভাই সাবেক জেলা পরিষদের সদস্য মাওলানা সহল আল- রাজী কে বিপুল ভোটে পরাজিত করে তিনি সিলেট জেলা পরিষদ ( বিশ্বনাথ -৬) সদস্য নির্বাচিত হন।

বিশ্বনাথ উপজেলায় ইতিপূর্বে যারা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন তারা সবাই দক্ষিণ বিশ্বনাথ কেন্দ্রীক এলাকার বাসিন্দা ছিলেন এবং এবারের নির্বাচনেও দক্ষিণ বিশ্বনাথ ও পৌর শহর কেন্দ্রীক ৯ জন প্রার্থী মাঠে আছেন। অত্রাঞ্চলের ভোট ভাগাভাগি করে নেবেন প্রত্যেক প্রার্থী। দক্ষিন পূর্ব ও দক্ষিণ-পশ্চিম এলাকার অন্যান্য প্রার্থীদের মত এতদঞ্চলে সমান তালে ভোট পাবেন এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ। এছাড়া উত্তর বিশ্বনাথের নিজ ইউনিয়ন খাজাঞ্চি, লামাকাজিতে আর কোন চেয়ারম্যান প্রার্থী নেই। বলা যায় দলমত নির্বিশেষে উত্তর বিশ্বনাথ এলাকার সিংহভাগ ভোট পড়বে আনারস মার্কায়। আনারসের পক্ষে লামাকাজি খাজাঞ্চী ইউনিয়ন সহ বিভিন্ন ইউনিয়নের স্থানীয় বিএনপির অনেক নেতা ভোট দানের পাশাপাশি ভোট সংগ্রহের কাজে মাঠে নেমেছেন। রামপাশা, অলংকারি ও দৌলতপুরে আনারসের রয়েছে ব্যাপক জনসমর্থন। ভোট পাবেন সকল প্রকার ভোটারের। সব মিলিয়ে মাঠের জরিপ বলছে এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন চেয়ারম্যান হওয়ার দৌড়ে সকল প্রার্থীর শীর্ষে অবস্থান করছেন।

প্রবাসী অধ্যুষিত বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দেশি ও প্রবাসী প্রার্থীদের মধ্য থেকে সকল প্রকার ব্যক্তিগত যোগ্যতা হিসেব করলে এডভোকেট গিয়াসের নাম সবার আগে বলতে হবে। একজন পূর্ণ শিক্ষিত ও সংগ্রামী রাজনীতিবিদ হিসেবে তাকে গণ্য করা যায়। সমাজ সেবায় অনেক অবধান ও স্বল্প সময়ে মানুষের সাথে মিশে যাওয়ার মত গুণ তাঁর মধ্যে বিরাজমান। কর্মট, দক্ষ ও সৎ প্রমাণ করার যথেষ্ট উদাহরণ রয়েছে।

কর্মজীবনে প্রতিষ্ঠিত এডভোকেট গিয়াস উদ্দিন আহমদ এর পড়ালেখা শুরু উপজেলার দুহাল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে। ১৯৯০ সনে ৫ম শ্রেণী পাশ, ১৯৯৬ সনে রামসুন্দর উচ্চ বিদ্যালয় হতে এস এস সি, সিলেট সরকারি কলেজ হতে ১৯৯৮ সনে এইচ এস সি পাশ করেন। এরপর সিলেট এম সি কলেজ হতে রসায়ন শাস্ত্রে বি এস সি অনার্স এবং এম এস সি-তে গ্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন।

সিলেট ‘ল’ কলেজ হতে ২০০৬ সালে এল এল বি পাশ করে ২০০৮ সালে বাংলাদেশ বার কাউন্সিল হতে সনদ গ্রহণ করেন। একি বছরে সিলেট জেলা বারে আইন পেশায় নিয়োগ হন। পারিবারিক জীবনে তিনি এক পুত্র সন্তানের জনক। তাঁর সহধর্মিণীও একজন আইনজীবী হিসেবে সিলেট জেলা বারে আইন পেশায় নিয়োজিত আছেন।

ছাত্র রাজনীতির তুখোড় এ নেতা সিলেট এমসি কলেজ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি, সিলেট মহা নগর যুবলীগের আহবায়ক কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে বিশ্বনাথ উপজেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদকের দায়িত্বে আছেন।

সজ্জন, সদালাপী ও কর্মী বান্ধব এ রাজনীতিবিদের স্বপ্ন উপজেলার মানুষের সেবা ও একটি মডেল উপজেলা গঠনের।

বাংলাদেশ আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত এডভোকেট গিয়াস উদ্দীন আহমদ ১৯৭৯ সালের ১০ ডিসেম্বর বিশ্বনাথ উপজেলার ২ নং খাজাঞ্চি ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ডের বিলপার গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। পিতা আব্দুর রহমান ও মাতা মোছাঃ ফুলতেরা বিবির ঔরস্যে তিনির আরো এক ভাই ও চার বোন রয়েছে সংসার।

আগামী ৮ মে উপজেলায় ১ লাখ ৮৮ হাজার ৩৭ জন (পুরুষ ৯৭ হাজার ৬ জন ও মহিলা ৯১ হাজার ৩১ জন) ভোটার ৭৪টি ভোট কেন্দ্রে নিজেদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করে আগামী ৫ বছরের জন্য নিজেদের পছন্দের প্রার্থীদেরকে ‘উপজেলা চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান’ পদে নির্বাচিত করবেন।

আপাতত বিজয়ের মাঠ তার দখলে রয়েছে এমনটি পরিলক্ষিত হচ্ছে। ৮ মে ভোট শেষে হয়তো তিনি বিজয়ের হাসি হাসবেন। বিশ্বনাথ উপজেলা বাসী প্রথম বারের মত উত্তর বিশ্বনাথ থেকে উপজেলা চেয়ারম্যান পেতে পারে।