ময়মনসিংহ

ঘাগড়া ইউপির শান্ত পরিবেশ, তবু ভোট ঘিরে শঙ্কা

  স্বাধীন বাংলা নিউজ ১৭ নভেম্বর ২০২১ , ৩:২৭ এএম অনলাইন সংস্করণ

ঘাগড়া ইউপির শান্ত পরিবেশ, তবু ভোট ঘিরে শঙ্কা

 ময়মনসিংহ সদর উপজেলার ঘাগড়া ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনের চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগের প্রার্থী, বিদ্রোহী প্রার্থীসহ ছয়জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। সাধারণ ভোটারদের ভাষ্য, শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও বিদ্রোহী প্রার্থীর মধ্যেই হবে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। এ নিয়ে দুই প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকলে নির্বাচন ঘিরে শঙ্কা বাড়বে। পরিবেশ এখন পর্যন্ত শান্ত থাকলেও, নির্বাচনের দিন কেমন থাকবে, তা বলা যাচ্ছে না।

ঘাগড়া ইউপি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান সরকার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও দুইবার চেয়ারম্যান ছিলেন। আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী সাইদুর রহমান ময়মনসিংহ সদর উপজেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আছেন ময়মনসিংহ কোতোয়ালি বিএনপির সহসভাপতি হাফিজ উদ্দিন, বিএনপির সমর্থক হিসেবে পরিচিত শামছুল আলম ওরফে সুরুজ মিয়া। এ ছাড়া আছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এনায়েত কবীর ও ইসলামী আন্দোলনের প্রার্থী আল আমিন।

বুধবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঘাগড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে সাধারণ মানুষ ও প্রার্থীদের কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিচ্ছিন্ন দু-একটি ঘটনা ছাড়া এখন পর্যন্ত নির্বাচনের পরিবেশ শান্ত আছে। তবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী শাহজাহান সরকার ও বিদ্রোহী প্রার্থী সাইদুর রহমানের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে দিন দিন উত্তেজনাকর পরিস্থিতি তৈরি হতে পারে।

মোহাম্মদ মোয়াজ্জেম নামের এক ভোটার বলেন, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনে তাঁদের প্রত্যাশা। নির্বাচনের দিন যদি কোনো প্রার্থীর পক্ষ থেকে সহিংসতার চেষ্টা করা হয়, তাহলে সাধারণ মানুষ তাতে যোগ দেবে না। হীরা মিয়া নামের একজন আওয়ামী লীগ কর্মী বলেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কোনো ধরনের উত্তেজনা সৃষ্টি করা হবে না, বিভিন্ন সভায় কর্মীদের এ কথা বলা হচ্ছে। তবে গত শুক্রবার বিএনপির প্রার্থী শামছুল আলমের কর্মীরা মিছিল করার সময় নৌকার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলেছেন। এরপরও আওয়ামী লীগের কর্মীরা সংঘর্ষে জড়াননি।

গোপাল নগরবাজারে কথা হয় সাধারণ ভোটার ও বিদ্রোহী প্রার্থী সাইদুর রহমানের কয়েকজন কর্মী-সমর্থকের সঙ্গে। সেখানে আওয়ামী লীগের কর্মী আলতাফ হোসেন বলেন, ‘নানা কারণে আমরা এবার দলীয় প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছি। এ কারণে আমাদের ওপর কিছুটা হুমকি আছে। আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষ থেকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতে থাকার জন্য জোর করে মানুষের সই নেওয়া হচ্ছে। এতে উত্তেজনা সৃষ্টি হচ্ছে। নির্বাচনের আগে এই উত্তেজনা বাড়তে থাকলে নির্বাচন ঘিরে শঙ্কা বাড়বে। মঙ্গলবার রাতে তালতলা এলাকায় বিদ্রোহী প্রার্থীর একজন কর্মীকে মারধর করেন আওয়ামী লীগের প্রার্থীর কর্মীরা।’

এসব অভিযোগ বানোয়াট দাবি করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহজাহান সরকার বলেন, ‘স্বতন্ত্র প্রার্থীর লোকেরাই উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে এবং বক্তব্য দিয়ে নির্বাচনের পরিবেশ নষ্ট করছেন। আমাদের কোনো কর্মী কোনো ধরনের উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করছেন না। আমরা সুষ্ঠু নির্বাচন চাই।’

বেশি আলোচনায় না থাকলেও বিএনপির প্রার্থী হিসেবে পরিচিত স্বতন্ত্র প্রার্থী হাফিজ উদ্দিন ও শামছুল আলম নির্বাচনে জয়ের বিষয়ে আশাবাদী। হাফিজ উদ্দিন বলেন, ‘গত ইউপি নির্বাচনে আমি বিএনপির মনোনীত প্রার্থী ছিলাম। এবার দলীয় প্রার্থী না হলেও দলের কর্মীরা আমার পাশেই আছেন। সুষ্ঠু ভোট হলে আমার জয়ের সম্ভাবনা বেশি।’